আজকে আমরা এই আর্টিকেলটির মধ্যে মুখে অ্যালার্জি দূর করার উপায় , কোন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে মুখের এলার্জি দূর করা যায় কেন মুখে এলার্জি হয় এই পুরো বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব । যারা দীর্ঘদিন থেকে মুখের এলার্জি জনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারে।
এলার্জি নামটার সাথে আমরা অনেকে পরিচিত । তবে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের এলার্জির সম্মুখীন হয়ে থাকে । এগুলোর মধ্যে একটি অসুস্তিদায়ক এলার্জি নাম হল মুখে এলার্জি । সাধারণ ভাবে নাক মুখ গলা এবং মাথার ত্বকে এই এলার্জি সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই এলার্জি যার শরীরে সৃষ্টি হয় সে খুবই অসুস্থদায়ক অবস্থায় পড়ে যায় ।
আমাদের অনেকেরই বিভিন্ন জায়গায় এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে । এলার্জি মূলত নয় ধরনের। এর মধ্যে অত্যন্ত যন্ত্রণা এবং অসস্তিদায়ক একটি এলার্জি হল মুখের এলার্জি। সাধারণভাবে রোদ, ঘাম, মানসিক অস্বস্তি, তেল, ঔষধ, পরিবেশ, পানি ইত্যাদির কারণে মুখে এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে।
মুখে এলার্জি সৃষ্টি হলে চেহারা নষ্ট হয়ে যায় এবং চুলকানির সৃষ্টি হয় । যা একজন স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে অনেক যন্ত্রণাদায়ক। প্রতিটা মানুষই চাই এই যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে । তাই অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সমাধান খুঁজে থাকেন।তাই অনেকেই জানতে চান মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম ।
কিছু কিছু ক্রিম রয়েছে যা ব্যবহার করে খুব সহজেই মুখে এলার্জি দূর করা সম্ভব হয় ।আজকে আমরা আপনাদেরকে ঠিক এলার্জি দূর করার কিছু উপায় সম্পর্কে সুন্দরভাবে পরামর্শ দেব । যেগুলো থেকে আপনারা খুবই দ্রুত একটি সমাধান পাবেন এলার্জি দূর করার জন্য। তো আসুন শুরুতেই কয়েকটি ক্রিম নিয়ে আলোচনা করা যাক।
- Taf Plus cream
- Ornoderam Cream
- Drem cream
- Ornordo Cream
- panderm
- Tocodrem plus
পেভিসন
মুখের এলার্জি দূর করার জন্য পেভিসন ক্রিমটি অত্যন্ত কার্যকর । যাদের মুখে ছাতার মতো এক ধরনের আবরণ সৃষ্টি হয়ে চুলকানি দেখা দেয় তারা এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এসব যেই মাত্রায় ব্যবহার করতে বলে সেই মাত্রার কম-বেশি ব্যবহার করা ঠিক হবে না। তবে এই ক্রিমটি শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার না করাটাই ভালো ।
ওরাডিন
মুখের এবং মাথা এলার্জি দূর করার জন্য অনেক ভালো কাজ করে ওরাডিন ক্রিমটি । এই ক্রিমটি এর সপ্তাহের কয়েকদিন ব্যবহার করলে এক মাসের মধ্যেই খুবই দ্রুত একটি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ক্রিমটি মাথার ত্বক এবং মুখ ও গলায় ব্যবহার করা যাবে ।
বিশেষ সতর্কতা
মুখে এলার্জি বা চুলকানি প্রতিরোধের জন্য বাজারে অনেক ধরনের ক্রিম রয়েছে । অনেক সময় আমরা ফার্মেসিতে গিয়ে এগুলো কিনে নিয়ে ব্যবহার করা শুরু করি । এক্ষেত্রে আমরা কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে ন। এটি অনেক বড় একটি ভুল।
মুখের এলার্জি চুলকানি দূর করার নামে বাজারে অনেক ধরনের নকল ক্রিম থাকে । যেগুলো ব্যবহার করার ফলে মানুষের ত্বকে বিরূপ পরিবর্তন আসে। পাশাপাশি চুলকানি বা এলার্জি আগের তুলনায় আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। যে কোন ঔষধ বা ক্রিম ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মুখে এলার্জি হওয়ার কারণ
অনেকেই জানতে চান মুখে এলার্জি হওয়ার কারণ কি এবং মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম ।আমাদের মুখে যে চুলকানি পায় এলার্জির সৃষ্টি হয় তা অনেকগুলো কারণে হতে পারে। এর থেকে মুক্তির জন্য আমরা ঘরোয়া ভাবে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারি।
মুখে এলার্জি হওয়ার অন্যতম কারণ গুলো :
- দীর্ঘ সময় সূর্যের আলোতে অবস্থান করার কারণে অথবা অনেক দিন সূর্যের আলোতে বের না হওয়ার কারণে মুখে এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে ।
- বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক জনিত কারণে মুখে এলার্জি হয়।
- কীটনাশক জাতীয় খাবার কসমেটিক ও নকল ক্রিম ব্যবহারের কারণে মুখে এলার্জি হতে পারে।
- ধুলাবালি সহ ঠান্ডা গরম আবহাওয়া এবং ঘাম থেকে মানুষের মুখে এলার্জি হয়।
- পরাগ রেণু ফুলের রেনু অথবা ব্যবহৃত কনডম থেকেও মুখে এলার্জি সংক্রমণ হতে পারে।
- গৃহপালিত পশু পাখির রোগ থেকেও আমাদের শরীরে এলার্জি সংক্রমণ দেখা যায়।
- ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে এলার্জির লক্ষণ পরিলক্ষিত হতে পারে।
মুখের এলার্জি দূর করার সহজ উপায়
মুখে এলার্জি দূর করার জন্য আমরা অনেকের সহজ উপায় খুঁজে থাকি । তবে মুখে এলার্জি হলে সহজ উপায় না খুঁজে কার্যকর উপায় খোঁজা সবচেয়ে জরুরী । কারণ আমাদের মুখের ত্বকে এলার্জির কারণে চুলকানি সৃষ্টি করে ত্বক নষ্ট করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বা নিজে নিজে যেকোনো ওষুধ ক্রিম অথবা কসমেটিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বক আরো নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।
তবে মুখের এলার্জি হলে স্বাভাবিক ভাবে খাবারের পরিবর্তন আনতে হবে এবং যতটুকু সম্ভব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে । এগুলোর পাশাপাশি যে কোন একটি ডাক্তারের পটর সমস্যা অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করলে খুব দ্রুত মুখের এলার্জি প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
এলার্জি ব্রণ দূর করার উপায়
এলার্জির কারণে আমাদের মুখে প্রায় সময়ে ব্রণ সৃষ্টি হয় । অনেক সময় আমাদের শরীরে কিছু ব্রণ বের হয় যেগুলো অনেক ব্যথার সৃষ্টি করে থাকে । সাধারন ভাবে এ ব্রণ গুলো এলার্জির কারণে মুখে বের হয়ে থাকে। গুলো দূর করার জন্য আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা বাজারে থাকা কসমেটিক গুলোর মধ্যে অধিকাংশই নকল ও ভেজাল যুক্ত।
যার কারণে নকল ভেজালযুক্ত কসমেটিক ব্যবহার করার পর আমাদের মুখে ব্রনের সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে আমরা ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই ব্রণ দূর করতে পারি ।ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করার জন্য আমাদেরকে ব্যবহার করতে হবে হলুদ, মেথি, দাওতো নিমপাতা ও কিছু ভেজোষ উপাদান।
এগুলোর মাধ্যমে আমরা ঘর থেকে খুব সহজেই ব্রণ দূর করতে পারি । আপনার যদি ঘরে বসে ব্রণ দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা আপনাদের জন্য পরবর্তীতে ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করার কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব ।
এলার্জি দাগ দূর করার উপায়
অনেকেই জানতে চান এলার্জি দাগ দূর করার উপায় এবং মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম এর নাম । এলার্জি সৃষ্টির কারণে আমাদের ত্বকে বিশেষ ধরনের চুলকানি সৃষ্টি হয় । শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই শরীর চুলকাতে থাকে। এবং অতিরিক্ত চুলকানির ফলে ত্বকে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ঘা সৃষ্টি হতে পারে। যা পরবর্তীতে অনেক ধরনের সমস্যায় ফেলে দেয়।
এলার্জির দাগ দূর করার জন্য কয়েকটি পথ অবলম্বন করা যায় । এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ ঘরোয়া পদ্ধতিতে চেষ্টা করে অপরদিকে ডাক্তারের পরামর্শে কিছু ক্রিম ব্যবহার করে। আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ ক্রিম ব্যবহার করেন তাহলে এই দাগ দূর করা।
তবে চুলকানির কারণের যদি অনেক বড় ক্ষত হয়ে যায় সেক্ষেত্রে দাগ দূর হতে অনেক বেশি সময় লেগে যায়। স্কয়ার কোম্পানির একটি ক্রিম রয়েছে যেটির মূল্য প্রায় ৩০০ টাকার মত সাধারণ ভাবে সেটি ব্যবহার করেই এলার্জির দাগ দূর করা যায়।
এলার্জি দূর করার ঘরোয়া সেরা উপায়
এলার্জির কারণে সৃষ্ট চুলকানির জায়গা থেকে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় তা দূর করার জন্য ঘরোয়াভাবে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। প্রথমত আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হবে। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গার ক্ষত আস্তে আস্তে দূর হবে।
এছাড়াও কিছু নিমপাতা রোদে শুকিয়ে গুড়া করে তার সাথে হলুদ এবং এলোভেরা মিশিয়ে ক্ষত জায়গায় নিয়মিত পেস্ট করে দিতে হবে । এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার ফলে ভালো একটি ফলাফল পাওয়া যাবে। তবে উক্ত পেস্টের মধ্যে কোন ধরনের মেডিসিন বা কসমেটিক উপাদান ব্যবহার করবেন না ।
মাথায় এলার্জি কেন হয় ?
সাধারণভাবে আমাদের মাথায় যখন তেল নিঃসরণ ক্ষমতা কম থাকে সে সময় চুলের গোড়ায় মেলাসিজিয়া নামক জায়গাতে তেল জমাট বাঁধে । এবং উক্ত জায়গাতে চুলকানি এবং জ্বালানির সৃষ্টি হয় । মাথায় এলার্জি হয় এটি একটু অন্যতম কারণ ।
এছাড়াও বিভিন্ন অসুখের জন্য যে এন্টিবায়োটিক এবং ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবেও মাথায় অ্যালার্জি হতে পারে । তারা অতিরিক্ত কিছু বদভ্যাসের কারণে মাথায় অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । যেমন অনেকেই অতিরিক্ত তামাক, জর্দা গুলসহ ইত্যাদি সেবন করে থাকে ।
মাথায় এলার্জির লক্ষণ
মাথায় এলার্জি হতে খুব বেশি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না । তবে সাধারণভাবে আমাদের মাথায় যখন এলার্জির সৃষ্টি হয় তখন মাথার ত্বকে কিছুটা চুলকানি সৃষ্টি হয়, চুলকানির পাশাপাশি উষ্ণ ত্বকে চটচটে ঘা সৃষ্টি হতে পারে । এছাড়াও বিভিন্ন সময় মাথার ত্বকে ছোট ছোট লাল রঙের গুটির সৃষ্টি হয়ে থাকে । সাধারন ভাবে মাথায় এলার্জির লক্ষণ এগুলোই ।
মাথার এলার্জি ঔষধ
আমরা পূর্বেই জেনেছি মাথায় এন্টিফাঙ্গাল ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের এলার্জি হতে পারে । তাই এন্টিফাঙ্গাল কে নিরাময় করার জন্য আমরা কিছু উপকরণ ব্যবহার করে মাথার অ্যালার্জি কমাতে পারি।
উপকরণ গুলো হলো:
টি টি অয়েল
এই তেলটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে হয় । তবে সরাসরি এটি মাথায় ব্যবহার করা যাবে না। এটি সাধারণত হেয়ার মাস্ক কিংবা শ্যামপুর সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে । তবে সরাসরি মাথায় ব্যবহার করলে এবং সপ্তাহের দুই-তিন দিনের অধিক ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
অ্যালোভেরা
শুধুমাত্র মাথার এলার্জি কমানোর জন্যই নয় , চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য এলোভেরা অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে । এলোভেরা পাতার মাঝে একটি নরম অংশ থাকে। অ্যালোভেরার নরম অংশটুকু বের করে মাথায় ভালো ভাবে ম্যাসাজ করুন । মেসেজ করার ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন । প্রতিমাসে পাঁচ থেকে ছয় বার এটি করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে ।
লেবুর রস
আমরা মাথাই যে তেল ব্যবহার করি সেটা সঙ্গে কিছু পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন । তবে অনেকে লেবুর রস মিশ্রিত তেল মাথায় দিয়ে পরবর্তীতে মাথা ধুয়ে ফেলেন না। এই ভুলটি কখনোই করা যাবে না। লেবুর রস মিশ্রিত তেল মাথায় দেওয়ার আধা ঘন্টা পর তা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অনেকের মাথার ত্বক সুস্থ থাকার কারণে চুলকানির হয়ে থাকে , এরূপ অবস্থায় অ্যাপেল ভিনেগার ব্যবহার করলে দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যায়। স্বল্প পরিমাণ কিছু পানির মধ্যে কিছু অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে মাথার ত্বকে ভালো ভাবে মাসাজ করুন ।
মেসেজ করার পর অবশ্যই ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন । সতর্ক থাকবেন ভিনেগার যেন কোনভাবেই শরীরের ভেতরে না যায়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলেই সর্বোচ্চ ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এছাড়াও পরবর্তীতে কোন বিষয়ের উপর জানার আগ্রহ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন ।
সুস্থতা থেকে আরও পড়ুন