কোন কোন ডালে এলার্জি আছে এ প্রশ্নটা অনেকের মনেই হয়ে থাকে । আমাদের এই আর্টিকেলটির মধ্যে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব আমরা প্রাপ্তাহিক জীবনে যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি সেগুলোর মধ্যে কোন খাবারগুলোতে সবচেয়ে বেশি এনার্জি থাকে । এছাড়াও আমরা আলোচনা করব কোন খাবার গুলো খেলে এলার্জি থেকে সবচেয়ে দ্রুত সময় প্রতিকার পাওয়া যায়।
এলার্জি সমস্যাটাকে আমরা অনেকে সাধারণভাবে নিলেও এটি কোন সাধারণ সমস্যা না। তাই আমাদেরকে পূর্বে থেকে সচেতন হওয়া উচিত খাবারের প্রতি, এলার্জি যুক্ত খাবার এবং এলার্জি মুক্ত খাবারের একটি তালিকা তৈরি করে ব্যবহার করলে এলার্জি হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না। তবে আসুন আমরা জেনে নেই কোন কোন ডালে এলার্জি আছে এবং কোন কোন খাবারে সবচেয়ে বেশি অ্যালার্জি থাকে।
কোন কোন ডালে এলার্জি আছে ?
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক ধরনের ডালের ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আমরা অনেকে জানি না কোন কোন ডালে এলার্জি আছে এবং কোন ডাল আমাদের শরীরের জন্য ভালো। ডাল আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতি করে নিয়ে আসে। কিছু টাল আছে যেগুলোতে এলার্জির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে যে ডালগুলো এলার্জির রোগীদের ক্ষেত্রে পরিহার করা জরুরী।
নিচের একটি ছোট্ট লিস্ট দেওয়া হল :
মসুর ডাল
মসুরের ডাল নামটা সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত । কারণ বাঙালির ডাল ছাড়া খাবার খুব একটা বেশি জমে না। তবে আমরা অনেকেই জানিনা মসুর ডাল এলার্জির সবচেয়ে বড় অংশ। মসুরের ডালে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে।
অনেক সময় লক্ষ্য করে দেখা যায় এলার্জি আক্রান্ত রোগীরা যদি মসুর ডাল খেয়ে থাকে তাহলে তাদের শরীরের অনেক বেশি এলার্জি সৃষ্টি হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে মসুর ডাল এলার্জির ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে আসে না। মূলত যাদের শরীরে পড়বে থেকে এলার্জির লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত থাকে তাদের ক্ষেত্রেই মসুর ডাল খেলে এলার্জি বৃদ্ধি পায় ।
খেসারী ডাল
মসুরের ডালের তুলনায় খেসারির ডালে কম এলার্জি রয়েছে । খেসারির ডাল খাওয়ার পর একটু মানুষের এলার্জি জনিত সমস্যা হয়। তবে তাদের পূর্বে থেকেই রক্তে এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে । যদিও হঠাৎ মাঝেমধ্যে খেসারি ডাল খেলে এ ধরনের কোন সমস্যার দেখা যায় না ।
বুটের ডাল
বুটের ডালের সাথে আমরা তুলনামূলকভাবে একটু কম পরিচিত । এলার্জির দিকথেকে এই ডালটি সম্পন্ন ভাবে নিরাপদ । যাদের অ্যালার্জি লক্ষণ দেখা দিয়েছে বাবা এখনো এলার্জির জন্য তো কোন সমস্যা হয়নি উভয়ে এই ডালটি খেতে পারবেন ।
মুগ ডাল
ডালের প্রজাতির মধ্যে আরও একটি সুপরিচিত নাম হল মুগের ডাল । গ্রাম বাংলার মানুষেরা এই ডালটি অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে খেয়ে থাকে । তবে এ ডালটিতে একেবারে অ্যালার্জি নেই তা বলা যায় না। এই ডালটিতে সামান্য পরিমাণ এলার্জির রয়েছে ।
কোন ধরনের মাংসে এলার্জি আছে ?
সাধারণভাবে দুই প্রকার মাংসে সবচেয়ে বেশি এলার্জি থাকে । যেটি আমরা সকলেই জানি। তবে এই দুই প্রকার মাংসে ছাড়া বাকি যে মাংসগুলো রয়েছে সেগুলোতেও কম বেশি এলার্জি রয়েছে। তবে সেগুলো মানুষের শরীরে সরাসরি কোন ইফেক্ট করে না।
যেমন মহিষের মাংস, মুরগির মাংস, কবুতরের মাংস, ছাগলের মাংস , ভেড়ার মাংস । এই মাংসগুলোতে তুলনামূলক এলার্জি থাকে না। মাংসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এলার্জি থাকে গরুর মাংসে এবং হাঁসের মাংসে । শুধুমাত্র হাঁস এবং গরুর মাংসই নয় হাঁসের ডিম এবং গরুর দুধেও প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে।
হাঁস এবং গরুর মাংস দুধ ডিম খাওয়ার ফলে চর্ম এবং রক্তে এলার্জির সংক্রমণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় । এ সময় অনেকের শ্বাসকষ্ট সহ মুখ না কান সহ হাতের তালু চুলকাতে পারেন। তাই যাদের পূর্বে থেকে এলার্জিজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা গরু এবং হাঁসের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন ।
কোন কোন মাছে এলার্জি আছে ?
প্রতিটা মাছের শরীরে কম বেশি এলার্জি রয়েছে । তবে মানুষের শরীরে থাকা এলার্জির উপরে নির্ভর করে কোন মাছ খেলে এলার্জির সংক্রমণটা কতটা বৃদ্ধি পাবে । নিচে কিছু মাছের তালিকা দেওয়া হয়েছে। উক্ত মাছগুলোর প্রতিটাতে এলার্জির সংক্রমণ আছে।
তবে সব ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে এর প্রভাব নাও করতে পারে। উক্ত মাছগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে পুঁটি এবং চিংড়ি মাছে। যাদের পূর্বে থেকে এলার্জিজনিত সমস্যা তারা এই দুটি মাছ থেকে বিরত থাকতে পারেন।
- সলমন মাছ
- টুনা মাছ
- সামুদ্রিক মাছ
- চিংড়ি মাছ
- ইলিশ মাছ
- পুটি মাছ
- পাবদা মাছ
কোন কোন শাকে এলার্জি আছে ?
অন্যান্য খাবারের তুলনায় স্বাভাবিক ভাবে যেকোনো ধরনের শাকে এলার্জির পরিমাণ কম থাকে । এলার্জির পরিমাণ সব থেকে বেশি থাকে মাছ ডাল এবং মাংসের। এক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের শাক খাওয়া যাবে । তবে শাকের মধ্যে অনেকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। নিচে কয়েকটি শাকের প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করা হলো ।
লাল শাক
লালশাকের তুলনামূলক কম এলার্জি রয়েছে । তবে লাল শাকের মধ্যে দুইটি আলাদা প্রকারভেদ রয়েছে । একটি প্রকারভেদ কিছুটা সাদা রঙের হয়ে থাকে। যেটি খেলে সামান্য পরিমাণ এলার্জি সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে যাদের পূর্বে থেকেই এলার্জিজনিত সমস্যা ছিল তাদের ক্ষেত্রে।
কলমি শাক
কলমি শাকে কিছুটা পরিমাণে এলার্জি রয়েছে । যাদের রক্তে এলার্জিজনিত সমস্যা, মসুর ডাল ,গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ ইত্যাদি খাবার পর শরীরে এলার্জির পরিমাণ বেশি হয়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে কলমি শাক এড়িয়ে চলা ভালো । তবে যাদের পূর্বে থেকে এলার্জির জন্য তো কোনো সমস্যা নাই তাদের ক্ষেত্রে কলমি শাক অত্যন্ত পুষ্টি জনিত একটি খাবার ।
কচু শাক
শাকের প্রকারভেদ এর মধ্যে সবথেকে বেশি পরিমাণে এলার্জি রয়েছে কচু শাকে । কচু শাকের মধ্যে বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। কিছু জাত অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এলার্জি মুক্ত হলেও কিছু কচু শাক খেলে শরীরে এলার্জির পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়।
সাধারণভাবে কিছু কচুর শাকের পাতার ওপরে কালো ধরনের হালকা দাগ থাকে । সেই শাকগুলো খাওয়াটা ঠিক না। আমরা অনেকেই এগুলো চিনতে পারিনা। শাকের ওপরে কালো অংশ বিশিষ্ট পাতাগুলো ছাড়া শাক নির্বাচন করলে সেগুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হবে এবং এলার্জি মুক্ত হবে ।
লাউ শাক
লাউ শাকে কোন ধরনের এলার্জি নেই । ছোট থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সকল ধরনের মানুষ এই শাকে খেতে পারে। তবে উল্লেখ খুঁজে অনেকেই লাউশাকের দন্ড খেয়ে থাকেন । এক্ষেত্রে লাউশাকের দন্ডে সামান্য পরিমাণ এলার্জি থাকে। হাঁচি-কাশি জনিত যাদের অ্যালার্জি সমস্যা তাদের ক্ষেত্রে লাউ শাকের দন্ড খাওয়া ঠিক না ।
পুইশাক
পুঁইশাক খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকলেও রয়েছে এলার্জি বৃদ্ধির সম্ভাবনা । বিশেষ করে যে পুঁইশাকগুলো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে তৈরি করা হয় সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে । বাসা বাড়িতে তৈরি পুঁইশাকে এলার্জি তুলনামূলক কম থাকে।
মসুর ডালে কি এলার্জি আছে ?
বুটের ডালে কি এলার্জি হয় ?
বুটের ডাল খেলে অতি সামান্য পরিমাণে এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে । বুটের ডাল শিশুদের ক্ষেত্রে না দেওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। পূর্বে থেকে যাদের এলার্জি জনিত সমস্যা থাকে তাদেরকে চেক বুটের ডাল খাওয়ার পরে সমস্যাটা আরো বেড়ে যা। বুটের ডাল খাওয়াতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি সৃষ্টি হয়।
ডাল খেলে কি এলার্জি হয় ?
ডাল খেলে এলার্জি হয় । তবে আমরা জানি ডালের মধ্যে অনেক রকমের প্রকারভেদ রয়েছে। সব ধরনের ডালে এলার্জি সংক্রমণ থাকে না। সাধারণভাবে আমাদের অতি পরিচিত মসুর ডালের সবচেয়ে বেশি এলার্জির লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও বাজারে থাকা অন্যান্য ডাল গুলোর মধ্যে এলার্জির পরিমাণ খুবই সামান্য পরিমাণে থাকে।
শিশুকে মুগডাল খাওয়ানো যাবে
শিশুদের মুগডাল খাওয়াতে কোন ধরনের সমস্যা নেই । কারণ মুগডালে যে পরিমাণ এলার্জি রয়েছে তার শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ক্ষতি করবে না । মুগডালে থাকা এলার্জি সাধারণত দীর্ঘ মেয়াদী এলার্জির রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি প্রভাব ফেলে থাকে। তাই শিশুদের বিকাশ ঘটার জন্য এই ডালটি নিরাপদে খাওয়াতে পারেন।
মুগ ডালে এলার্জি আছে
মুগ ডালে সামান্য পরিমাণ এলার্জি রয়েছে । তবে সেটা মসুর ডালের মত অতি পরিমানে নয় । যাদের দীর্ঘমেয়াদী এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা মুগ ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন।
কলমি শাকে কি এলার্জি আছে ?
কলমি শাকে সামান্য পরিমাণে এলার্জি রয়েছে । বিশেষ করে যাদের চর্মরোগ জনিত এলার্জি তাদের ক্ষেত্রে এই শাক খাবার নিরাপদ নয় ।কারণ এই শাক খাওয়ার পর শরীরে চুলকানির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।
সুস্থতা থেকে আরও পড়ুন