শরীর ও স্বাস্থ্য

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় ।

ছাগল আমাদের সকলের কাছে অতি পরিচিত একটি গৃহপালিত পশু। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই এই ছাগল পালন করে থাকে। অনেকে ছাগল পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এবং ছাগল পালন করে তারা লাভবান ও হচ্ছেন। এই পোস্টে ছাগল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। কিভাবে ছাগল পালন করবো। উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো। পুরো পোস্ট টি পড়বেন আশা করছি আপনাদের উপকারে আসবে।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় ।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় ।

ছাগল পালন মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি পেশা। কেউ শখের বসে বিভিন্ন জাতের ছাগল পালন করে থাকে। আবার কেউ দেখা যায় ব্যবসার জন্যে ছাগল পালন করে থাকে। অনেকেই বিভিন্ন জাতের ছাগল পালন করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। কেউ দেখা যায় বড় জাতের ছাগল পালন করে থাকেন এবং সে ছাগল থেকে পাওয়া ধুদ বিক্রি করে আয় করে থাকেন। ছাগল পালন মনুষের জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা। তাই আমরা জানতে চাই উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় ।

 

দেখা যায় বাংলাদেশের অধিকাংশ ভূমি ছাগল পালন করার জন্য উপযোগী কোন কোন বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৭৫% জায়গা ছাগল পালনের জন্য উপযোগি। গ্রামের বেশির ভাগ বসতবাড়ি গুলোতে ২ থেকে ৪ টি ছাগল পালন করতে দেখা যায়। আমাদের দেশে ছাগল পালনে তেমন কোন খরচ হয় না বলে মানুষ খুব সহজেই ছাগল পালন করতে পারে। এবং এই ছাগল পালনে তেমন কোন খরচ হয়না বলে ছাগল পালন গ্রামের মানুষের কাছে ব্যবসার একটি মাধ্যম হয়ে গেছে।

 

যে কেউ চাইলেই ছাগল পালন করে লাভবান হতে পারবে। যেসব মানুষের গরু পালন করার সামর্থ্য নেই তারা ৪ থেকে ৫ টি ছাগল পালন করে থাকে এবং লাভবান হয়। এতে করে সল্প আয়ের মানুষ গুলো খুব সহজেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। তাছাড়া ছাগল আমাদের দেশের মানুষের মাংসের চাহিদা পূরন করে থাকে। আমরা সকলেই জানি ছাগলের মাংস কতো পুষ্টিকর খাবার। তাই ছাগল আমাদের অত্যান্ত প্রয়োজনীয় পশু জাতীয় সম্পদ।

 

আমরা সকলেই উন্নত জাতের ছাগল পালন করতে চাই। তাই আমরা জানতে চাই যে  উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় । উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায় তা জানার আগে জানতে হবে উন্নত জাতের ছাগল কোন গুলো।

 

নিচে আমাদের দেশে পালনকৃত উন্নত জাতের ছাগলের নাম উল্লেখ করা হলোঃ

১। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল।

২। বারবারি ছাগল।

৩। তোতাপুরি ছাগল।

৪। রাম ছাগল – যমুনা পারি ছাগল নামেও পরিচিত।

৫। বিটল ছাগল।

৬। বোয়ার ছাগল।

 

এই ছাগল গুলোই উন্নত জাতের ছাগল। এই ছাগল গুলো পালন করে মানুষ অনেক লাভবান হচ্ছে। নিচে ছাগল গুলো কোথায় পাওয়া যাবে তা তুলে ধরা হবে।

 

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কোথায় পাওয়া যাবে।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কোথায় পাওয়া যাবে।

আমাদের দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় ছাগলের জাত। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত শুধু বাংলাদেশে নয় এটি সারা বিশ্বের উন্নত জাতের ছাগলের জাত গুলোর মধ্যে একটি। এই জাতের ছাগল দেখা যায় বিশ্বের সব দেশেই পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে যার ফলে এই জাতের ছাগল পালন করে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

 

সাধারণ ছাগল গুলো যে খাবার খায় এবং যতটুকু বেড়ে উঠে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ঠিক সে পরিমান খাবার খেয়েই সাধারন ছাগল থেকে দ্বিগুন বেড়ে উঠে। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে খরচও খুব কম তাই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন করে অনেক লাভবান হওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আমাদের পর্যাপ্ত মাংসের চাহিদা পূরন করে থাকে। শুধু মাংসের চাহিদা নয় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া অনেক উন্নত মানের হওয়ার কারনে বিশ্বে এর চাহিদা অনেক।

 

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাতের ছাগল গুলো একসাথে ৩/৪ টি বাচ্চা দিতে পারে যা একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনকারীর কাছে খুবই লাভজনক। এই ছাগল গুলো যেকোনো পরিবেশ এবং আবহাওয়ার সাথে খুব সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এই ছাগল গুলোর এভারেজ ২০ কেজি থেকে ২২ কেজি ওজন হয়ে থাকে। তবে ছাগল গুলো যদি আপনি অধিক সময় পালন করতে পারেন তাহলে এর ওজন ৩০ কেজি থেকে ৩৫ কেজি হতে পারে।

 

অনেকেই এই জাতের ছাগল পালন করতে চাই কিন্তু এই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানি না। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আমাদের দেশের বগুরা, দিনাজপুর এবং রাজশাহী এ অঞ্চল গুলোতে পাওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল গুলো পেতে সরকারী ছাগল উন্নয়ন খামার এই খামার গুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এটি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান এখান থেকে আপনারা ব্ল্যাক বেঙ্গল গুলো ক্রয় করতে পারবেন।

 

রারবারি ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
রারবারি ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

যারা ছাগলের খামার করবেন ভাবছেন তাদের জন্য একটি সেরা এবং লাভজনক ছাগলের জাত এই বারবারি ছাগলের জাত। কেউ যদি খামারের মধ্যে ছাগল পালন করতে চায় তাহলে সেরা একটি জাতের ছাগল বারবারি ছাগল। এই ছাগল গুলো বেশির ভাগ খামারেই পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া বিশ্বের কম বেশি সকল দেশ গুলোতেই এই বারবারি জাতের ছাগল চাষ করতে দেখা যায়।

 

এই ছাগল আমাদের মাংসের চাহিদা পূরন করার পাশাপাশি ধুদের চাহিদাও পূরন করে থাকে।আমাদের দেশের এখন বেশির ভাগ খামারি এই বারবারি জাতের ছাগল পালনের দিকে ব্যাপক চাহিদা দেখাচ্ছেন। কেননা এই ছাগল গুলো অনেক কম পুঁজি নিয়ে ব্যাবসা করা যায় এবং এতে করে অধিক লাভবানও হওয়া যায়। তাই খামারিদের কাছে চাহিদার তুঙ্গে রয়েছে এই বারবারি জাতের ছাগল গুলো। এই ছাগল গুলোর বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

 

তাছাড়া এই ছাগলের মাংস অনেক সুস্বাদু হওয়ার কারনে মানুষের কাছে অতি চাহিদার একটি খাবার এই বারবারি জাতের ছাগলের মাংস।এই ছাগল গুলোর বিশেষ গুন হচ্ছে এই বারবারি জাতের ছাগল গুলো অনেক তারাতাড়ি বেড়ে উঠে। এই বারবারি জাতের ছাগল গুলোর এভারেজ ওজন ২৫ কেজি হয়ে থাকে তবে ছাগল গুলো অধিক সময় পালন করলে ৪০ কেজি ওজনের হতে পারে।

 

এই বারবারি ছাগল গুলো পালন করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় খুজে থাকি। এবং রারবারি ছাগল কোথায় পাওয়া যায় তা জানতে চাই। এই জাতের ছাগল গুলো পশ্চিম অঞ্চলে বা পশ্চিম বঙ্গে পাওয়া যায়। তাছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন হাটে এই ছাগল গুলো পাওয়া যায়। তবে এই ছাগল গুলো পাবনায় বেশি পালন করা হয়ে থাকে।

 

তোতাপুরি ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।
তোতাপুরি ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

তোতাপুরি ছাগল এই জাতের ছাগল গুলোকে সবচেয়ে বড় জাতের ছাগলের জাত গুলোর মধ্যে একটি বলা হয়। এই জাতের ছাগল সবচেয়ে বেশি পালন করা হয় ভারতের রাজস্থানে। তবে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এই ছাগলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেখা যায় এই জাতের ছাগল গুলো উন্নত দেশে মাংসের চাহিদা পূরন করার জন্য ফার্মে পালন করা হয়।

 

তবে আমাদের দেশে এই তোতাপুরি ছাগল ফার্মে পালন খুব একটা দেখা যায় না। এই ছাগলের ছানার দাম বেশি হওয়ার কারনে এবং এই ছাগল পালনে বেশি পুঁজির দরকার হয় বলে খামারীরা এই ছাগল পালনে খুব একটা আগ্রহ দেখায় না। তবে কেউ বেশি পুঁজি নিয়ে ছাগলের ব্যাবসা করতে চাইলে তোতাপুরি ছাগলের কোন বিকল্প নেই।

 

তার কারন হচ্ছে পূর্ন বয়সের হলে ৮০ থেকে ১০০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। এই ছাগল গুলো পালনে আপনার ৮০০০ থেকে ১০০০০ টাকা খরচ হয়ে থাকে। এবং এই ছাগল গুলো বাজারে পূর্ন বয়সের হলে ৩৫০০০ থেকে ৪০০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। তাই অনেক ব্যাবসায়ীরা অধিক লাভের জন্য এই তোতাপুরি জাতের ছাগল পালন করে থাকে। তবে অনেকে ধুদের ব্যাবসা করার জন্য এই ছাগল পালন করে থাকে।

আমরা অনেকেই এই জাতের ছাগল গুলো পালন করার জন্য খুঁজি। এবং তোতাপুরি ছাগল কোথায় পাওয়া যায় তা জানতে চাই। এই তোতাপুরি ছাগল গুলো রাজশাহী এবং নাটোরে বেশি পালন করতে দেখা  যায় ।  আপনারা  ঢাকায়  বড়  বড়  কিছু  ছাগলের  বাজারে  এই  তোতাপুরি  ছাগল  গুলো  পেয়ে যাবেন।

 

রাম ছাগল বা যমুনাপারি কোথায় পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
রাম ছাগল বা যমুনাপারি কোথায় পাওয়া যায়।

রাম ছাগল আমাদের দেশের অনেক অঞ্চলে যমুনাপারি ছাগল নামেও পরিচিত। রাম ছাগল সম্পর্কে কম বেশি সকলেই জানেন। কেননা এই ছাগল গুলো বাংলাদেশের সকল অঞ্চলেই দেখা যায়। রাম ছাগল পালন করে গ্রামের অনেক খামারী অধিক লাভবান হয়েছে।

 

কেননা এই ছাগল পালনে কোন প্রকার খরচ হয় না এবং এই জাতের ছাগল গুলো পূর্ন বয়সের হলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। এই ছাগল গুলো পালনের সময় কোন রোগ না হলে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা খরচে এই জাতের ছাগল গুলো পালন করা সম্ভব বলে খামারীরা এই জাতের ছাগল পালন করে থাকে। এই ছাগল গুলো পূর্ন বয়সের  হলে  ৫০ থেকে ৬০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে।

এই  জাতের  ছাগল  গুলো  মাংসের  চাহিদা  পূরনের  পাশাপাশি  ধুদের  চাহিদাও  পূরন  করে  থাকে । একটি রাম  ছাগল  থেকে  একদিনে  ৫০০  থেকে  ৮০০  গ্রাম  ধুদ  পাওয়া  যায়।  এই যমুনাপুরি জাতের  ছাগল  সাধারণত  ২  টি করে ছাগলের ছানা প্রসব করে থাকে। এই জাতের ছাগলের বেশ ভালো রোগ প্রতিরোধের  ক্ষমতা রয়েছে। এবং বিক্রি করে অনেক খামারীরা  অনেক  লাভবান  হয়ে  থাকে।

 

অনেকে এই ছাগল গুলো পালন করতে চায়। কিন্তু অনেকে জানেন বা যে রাম ছাগল বা যমুনাপারি কোথায় পাওয়া যায়। আমাদের দেশের সীমান্ত অঞ্চলে এই যমুনাপুরি বা রাম ছাগলের অধিক চাষ হয়ে থাকে। এই যমুনাপুরি ছাগল গুলো আপনারা ঢাকার বা বাংলাদেশের যেকোনো ছাগলের হাট থেকেই ক্রয় করতে পারবেন।

 

বিটল ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
বিটল ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

বিটল ছাগল আমাদের এশিয়া মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। তাদের মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানে বিটল ছাগল সবচেয়ে বেশি পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও বিটল ছাগলের চাহিদা কম নয়। আমাদের দেশের অনেক খামারী এবং সাধারণ মানুষ এই বিটল ছাগল পালন করে থাকে।

 

বিটল ছাগলের অন্যতম প্রধান একটি গুন হচ্ছে এই ছাগল অন্য সব জাতের ছাগলের তুলনায় ধুদ বেশি দিয়ে থাকে। বিটল ছাগলের যদি ভালো মতো পরিচর্যা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো যায় তাহলে একটি পূর্ণ বয়স্ক বিটল ছাগল এক দিনে প্রায় ৪ লিটার ধুদ দিয়ে থাকে। তবে বিটল ছাগলের ধুদ দেিয়ার বিষয়টি আপনি ছাগলকে কি পরিমান খাবার খাওয়াচ্ছে সে বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

 

তবে বিটল ছাগল আর বাকি জাতের ছাগলের মতেই সাধারন খাবার দিয়ে পালন করা যায়। এই বিটল ছাগল গুলো ১২ থেকে ১৪ মাসের হলে পূর্ন বয়সের হয়ে যায়। এই বিটল ছাগল ২ থেকে ৩ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে। এই ছাগল গুলো সাধারণত এভারেজ অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। তবে বেশি দিন পালন করলে ৬০ থেকে ৭০ কেজি ওজনের হয়ে থাকে।

 

আমরা অনেকেই বিটল ছাগল পালন করতে চাই। এবং জানতে চাই বিটল ছাগল কোথায় পাওয়া যায়। এই ছাগল গুলোও রাজশাহী অঞ্চলে অধিক পরিমানে পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া রাজশাহীর নাটোরে এই ছাগল সবচেয়ে বেশি পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া আপনারা বিভিন্ন জেলার ছাগলের খামার থেকে এই বিটল ছাগল ক্রয় করতে পারবেন।

 

বোয়ার ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
বোয়ার ছাগল কোথায় পাওয়া যায়।

বোয়ার ছাগল হলো এই পর্যন্ত যত গুলো ছাগলের জাতের নাম উল্লেখ করেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ছাগলের জাত হচ্ছে এই বোয়ার ছাগল। বোয়ার ছাগল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এর মাংস ততো সুস্বাদু। বোয়ার ছাগলের মাংস সারা বিশ্বের কাছে অনেক জনপ্রিয়। ইউরোপ,আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় বড় দেশ গুলো বোয়ার ছাগলের অনেক চাহিদা রয়েছে। এই দেশ গুলোতে প্রচুর বোয়ার ছাগল পালন করা হয়ে থাকে।

 

বোয়ার ছাগলের মাংসের স্বাদ অন্যান্য ছাগল গুলো থেকে অনেক বেশি। তাই বোয়ার ছাগলের মাংস সকলের কাছেই একটি চাহিদা সম্পন্ন খাবার। তাছাড়া বোয়ার ছাগল পালনে খরচও কম হয়। যার ফলে সাধারণ খামারীরা খুব সহজেই এই ছাগলটি পালন করতে পারে। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বোয়ার জাতের ছাগলে ওজন ১২০ কেজি হয়ে থাকে।

 

এবং এই ছাগলটি যদি অধিক সময় পালন করা হয় তাহলে এর ওজন ১৬০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।তাছাড়া এই ছাগলের একটি বিশেষ গুন হচ্ছে এটি খুব তারাতাড়ি বেড়ে উঠে। এই ছাগল গুলো মাত্র ৬ মাসের মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি ওজনের হয়ে যায়। এই বোয়ার জাতের ছাগল গুলো বাকি সাধারন জাতের ছাগলের মতই একসাথে ২ টি ছানা দিয়ে থাকে।

 

আমরা অনেকেই এই বোয়ার জাতের ছাগল পালন করতে চাই। এবং বোয়ার ছাগল কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চাই। বোয়ার জাতের ছাগল গুলো সাধারণত সাধারণ মানুষ খুব কম পালন করে থাকে। তবে ছাগল খামারীদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় জাতের ছাগল। এই ছাগল গুলো ক্রয় করতে হলে বড় বড় ছাগলের খামার গুলোর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় এই ছাগল গুলো পাওয়া যায়।

 

উন্নত জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম ২০২৩।

 

উন্নত জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম ২০২৩।
নিচে কয়েকটি উন্নত জাতের ছাগল এবং ছাগলের বাচ্চার দাম উল্লেখ করা হলোঃ

১। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল- ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★একটি ৪ থেকে ৫ মাসের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছানার দাম হতে পারে ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের দাম হতে পারে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

২। বারবারি ছাগল – বারবারি জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★ একটি ৫ থেকে ৬ মাসের বারবারি ছাগলের ছানার দাম হতে পারে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ৪০ থেকে ৪৫ কিলো ওজনের বারবারি জাতের ছাগলের দাম হতে পারে ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা।

৩। তোতাপুরি ছাগল- একটি তোতাপুরি জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★ একটি ৪ থেকে ৫ মাসের তোতাপুরি জাতের ছাগলের ছানার দাম হতে পারে ১০০০০ থেকে ১৫০০০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ৬ টি দাঁতের তোতাপুরি জাতের ছাগলের দাম হতে পারে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

৪। রাম ছাগল – একটি রাম ছাগল বা যমুনাপুরি জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★ একটি ৪ থেকে ৫ মাসের রামছাগল বা যমুনাপুরি জাতের ছাগলের ছানার দাম হতে পারে ৩০০০ থেকে ৪০০০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক রাম ছাগল বা যমুনাপুরি জাতের ছাগলের দাম হতে পারে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা।

৫। বিটল ছাগল- একটি বিটল জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★ একটি ৪ থেকে ৫ মাসের বিটল জাতের ছাগলের ছানার দাম হতে পারে ৫০০০ থেকে ৬০০০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বিটল জাতের ছাগলের দাম হতে পারে ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা।

৬। বোয়ার ছাগল- একটি বোয়ার জাতের ছাগলের বাচ্চার দাম বয়স অনুযায়ী ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ★ একটি ৪ থেকে ৫ মাসের বোয়ার জাতের ছাগলের ছানার দাম হতে পারে ১৮০০০থেকে ২৫০০০ হাজার টাকা। ★ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক বোয়ার জাতের ছাগলের দাম হতে পারে ৭০ থেকে ১ লক্ষ টাকা।

তবে যে দাম গুলো উল্লেখ করা হয়েছে তা বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হতে পারে। তাছাড়া ওজন এবং বয়সের অনুপাতে একেক বোয়ারজাতের ছাগলের দাম ভিন্ন হতে পারে।

 

সবচেয়ে বড় ছাগলের জাত কোনটি।

 

সবচেয়ে বড় ছাগলের জাত কোনটি।

আমরা অনেকেই শখের বসত বড় জাতের ছাগল পালন করতে চাই। আবার কেউ বা ব্যাবসা করতে বড় জাতের ছাগল পালন করতে চাই।তাই অনেকে জানতে চায় যে সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল কোন গুলো।

চলুন জেনে নেওয়া যাক সবচেয়ে বড় জাতের ছাগলের নামঃ

১। কাশ্মীরি ছাগল- কাশ্মীরি ছাগল হলো সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল। এই ছাগল গুলোর গড় ওজন হয়ে থাকে ১৩০ থেকে ১৫০ কেজি।

২। লাল কালাহারি ছাগল – লাল কালাহারি ছাগলকে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ছাগল বলা হয়ে থাকে। এদের গড় ওজন হয়ে থাকে ১৫০ কেজি।

৩। মারাকেশ ছাগল – মারাকেশ ছাগলও সবচেয়ে বড় জাতের ছাগলের মধ্যে একটি। এদের একেকটির গড় ওজন হয়ে থাকে ১২০ থেকে ১৩০ কেজি।

৪। হোয়াইট স্টার ছাগল – হোয়াইট স্টার ছাগল পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ছাগল। এ ছাগলের একেকটির গড় ওজন ১৩০ থেকে ১৫০ কেজি। এই ছাগল গুলো বাংলাদেশেও পালন করা হয়ে থাকে।

৫। বোয়ার ছাগল- বড় জাতের ছাগলের মধ্যে বোয়ার হলো সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল। প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক বোয়ার ছাগলে এভারেজ ওজন ৭০-৮০ কেজি।

৬। তোতাপুরি ছাগল – তোতাপুরি ছাগলও সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল গুলোর মধ্যে একটি। তোতাপুরি ছাগলে গড় ওজন হয়ে থাকে ৭০ থেকে ৮০ কেজি। তবে অন্যান্য বড় জাতের ছাগল গুলো আমাদের দেশে পাওয়া না গেলে এই তোতা পুরি ছাগল আমদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায়।

 

উপরে উল্লেখিত ছাগল গুলো ছাড়াও আরও বড় জাতের ছাগল রয়েছে।

 

কোন জাতের ছাগল পালনে লাভ বেশি হয়।

 

কোন জাতের ছাগল পালনে লাভ বেশি হয়।

আমাদের বাংলাদেশে হত দরিদ্র মানুষের কাছে ছাগল পালন অতি পরিচিত একটি পেশা। আমাদের দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছাগল সবচেয়ে বেশি পালন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া এই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে কোন খরচ হয় না বলে এই ছাগলটি পালন করলে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

 

তবে এই ছাগলটি পালন করে বড় করে তুলতে বেশ লম্বা সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে।তাছাড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন করলে সব দিক থেকেই লাভবান হওয়া য়ায়। তবে লাভবান ছাগলের কথা বলতে গেলে আমি এগিয়ে রাখবো রাম ছাগল বা যমুনাপুরি জাতের ছাগলকে। কারন এই রাম ছাগল অনেক তারাতাড়ি বেড়ে উঠে।

 

দেখা যায় একটি রাম ছাগল ১০ মাসের মধ্যে বিক্রি করার উপযোগী হয়ে। একটি রাম ছাগলের বয়স ১০ মাস হলে ১০ থেকে ১২ হাজারটাকায় বিক্রি করা যায়। তাছাড়া এই ছাগল সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। তাই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মতো রাম ছাগল বা যমুনাপুরি জাতের ছাগল গুলো পালন করতে তেমন কোন খরচ হয় না।

 

এই ছাগল গুলো ১ বছর বয়স হলে অনায়াসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। তাই রাম ছাগল পালনে একজন খামারী অধিক লাভবান হতে পারেন। এবং আমাদের দেশের বেশির ভাগ খাবারীরার এই রাম ছাগল পালন করে থাকে। তাই আপনি চাইলে রাম ছাগল পালন করতে পারেন।

 

পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

 

ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *