ই পাসপোর্ট করার খরচ ও নিয়ম ২০২২
কিভাবে ই পাসপোর্ট করবেন, ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ হবে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, কি কি কাগজপত্র লাগবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং যাবতীয় তথ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।
ই পাসপোর্ট করার খরচ ও নিয়ম ২০২২ ।
যারা ২০২২ সালে এসে পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন তারা সকলেই জানেন যে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট চালু করেছে। ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর থেকেই মানুষ পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করে ই পাসপোর্ট নিচ্ছে।
এবং বাংলাদেশের সকল জেলা গুলোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই পাসপোর্ট করার অনুমোদন দওয়ায় এখন মানুষ খুব সহজেই পাসপোর্ট করতে পারছে।
জানুন ই পাসপোর্ট করার খরচ ও নিয়ম ২০২২ ।
যারা নতুন পাসপোর্ট করতে চাচ্ছে তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ ই জানেন না যে কিভাবে ই পাসপোর্ট করতে হয়। এবং কিভাবে ই পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে করতে হয়। অনলাইনে আবেদন করার সুবিধা হচ্ছে আপনি খুব সহজেই দালাল ছাড়া আপনার পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কিভাবে পাসপোর্ট আবেদন এর ফর্ম পূরন করবেন তার সম্পূর্ণ কার্যক্রম আমি দেখাবো। সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন এবং সঠিক গাইড লাইন অনুযায়ী আপনার ই পাসপোর্ট করার কার্যক্রম সম্পূর্ণ করুন।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পরবে।
ই পাসপোর্ট করার জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস লাগবে। ই পাসপোর্ট করতে বেশি ডকুমেন্টসের দরকার পরে না গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ডকুমেন্টস হলেই ই পাসপোর্ট করা যায়।
নিচে ডকুমেন্টস গুলো উল্লেখ করা হলো।
১। আপনার পাসপোর্ট আবেদনের কপি লাগবে। ( অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে)
২। আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিলের কাগজের ফটোকপি এবং আপনি কোন এলাকায় থাকেন, আপনার সে এলাকা বা জায়গার স্থায়িত্ব আছে কিনা তার প্রমান পত্র। আপনি যে জায়গা থেকে পাসপোর্ট করবেন সে জায়গায় আপনি যদি স্থায়ী না হন তবে আপনার স্থায়ীত্ব যে জায়গায় সেখান থেকে পাসপোর্ট করতে হবে।
৩। আপনার এলাকা যদি ইউনিয়ন ভিত্তিক হয়ে থাকে তাহলে সে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এর দেওয়া সনদ পত্র লাগবে। এবং ইউনিয়ন ভিত্তিক না হলে নাগরিক সনদ লাগবে।
৪। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে বয়স ১৮ বছর বা এখনোও জাতীয় পরিচয় পত্র না হলে জন্ম নিবন্ধন এর কার্ড লাগবে সাথে বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
৫। আপনি যদি কোন পেশায় নিয়োজিত থাকেন তাহলে তার সনদ পত্র ও তার আইডি কার্ড এর ফটোকপি লাগবে।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২২।
পাসপোর্ট করার জন্য আপনার করনীয়- এবং ই পাসপোর্ট করার খরচ ও নিয়ম ২০২২
অনলাইনে পাসপোর্ট এর আবেদন করার জন্য আপনাকে www.epassport.gov.bd এ ওয়েবসাইট টিতে চলে যেতে হবে। ওয়েবসাইট টি ভিজিট করার জন্য আপনাকে গুগল সার্চ অপশন থেকে উল্লেখ করা লিংক দিয়ে সার্চ করলে আপনাকে সরাসরি পাসপোর্ট আবেদন পেইজে নিয়ে যাবে।
আমরা নিচে ধাপ অনুযায়ী জেনে নিব পাসপোর্ট করার নিয়াবলি।
১। পাসপোর্ট করার জন্য থানা ও জেলা নির্বাচন।
প্রথম ধাপে আমরা জানবো কিভাবে আপনার থানা ও আপনার জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক অফিস নির্বাচন সম্পর্কে। প্রথমে আপনাকে পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার জন্য পাসপোর্ট এর মূল ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে।
আপনি গুগল এ গিয়ে (e passport application) ভিজিট করবেন।সেখানে Directly to online application একটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করবেন। তার পর আপনার সামনে একটি ফর্ম পূরন পেইজ ওপেন হবে।
সেখান থেকে আপনাকে আপনার থানা সিলেক্ট করে দিতে হবে এবং আপনার জেলার নাম সিলেক্ট করে দিতে হবে।এর পর আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে। ই মেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনি সচল একটি ইমেইল দিয়ে দিবেন।
মনে রাখবেন সঠিক ইমেইল দিবেন কেননা এই মেইলে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে। যেই ইমেইলটি দিবেন সে ইমেইল এর পাসওয়ার্ড যেন আপনার কাছে থাকে বা আপনার জানা থাকে। যদি আপনার ইমেইল পাসওয়ার্ড জানা না থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই ফরগেট পাসওয়ার্ড করে ইমেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
২। কিভাবে ইমেইল ভেরিফিকেশন করবেন।
ইমেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনি ইমেইল দেওয়ার অপশনে ইমেইলটি দিয়ে দিবেন। তার পর আপনার ইমেইলে পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি ইমেইল পাঠানো হবে। সেই মেইলে একটি লিংক দিয়ে দিবে তারা আপনাকে সেই লিংকটিতে ক্লিক করে ইমেইল টি ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে।
ইমেইল দেওয়ার সময় অবশ্যই সঠিক ইমেইলটি দিবেন কেননা ইমেইল ভুল হলে আপনি ভেরিফিকেশন কোডটি পাবেন না। যার ফলে আপনি ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে পারবেন না। ইমেইল ভেরিফিকেশন ছাড়া আপনাকে পাসপোর্ট ওয়েবসাইট লগিন এক্সেস দেওয়া হবে না।
৩। পাসপোর্ট এর জন্য ব্যক্তিগত তথ্য পূরন।
আপনি যদি ইমেইল ভেরিফিকেশন টি সঠিক ভাবে করে থাকেন তাহলে আপনাকে পূনরায় লগিন অপশনে যেতে হবে। সেখানে আপনার ইমেইলটি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগিন করুন।
লগিন করা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। আপনার নাম ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বারটি দিয়ে দিবেন।সকল ইনফরমেশন গুলো আপনাকে নির্ভুল ভাবে দিতে হবে। খুব সতর্কতার সাথে এই তথ্য গুলো দিতে হবে।
তথ্য গুলো সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে নিচে একটি save and continue নামে একটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করবেন। ক্লিক করলে আপনার একাউন্টের সব কাজ শেষ হবে।
৪। পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম পূরন।
আপনি উপরে উল্লেখ করা কাজ গুলো সম্পূর্ণ করলে আবেদন ফর্ম পেয়ে যাবেন। সেখানে আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার কার্ড অনুযায়ী তথ্য গুলো দিতে হবে। যদি আবেদনকারী ভোটার না হয়ে থাকে তাহলে নিচের পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য কনটি প্রয়োজন ভোটার কার্ড নাকি জন্ম নিবন্ধন।
যদি আপনার বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে এবং আপনার এখনও ভোটার কার্ড হয়নি সেই ক্ষেত্রে আপনি জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ফর্ম পূরন করবেন।
আপনার বয়স যদি ২০ বছরের বেশি হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি জন্ম নিবন্ধন কার্ড দিয়ে ফর্ম পূরন করতে পারবেন না। আপনার অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার কার্ড থাকতে হবে।
ভোটার কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী আপনার সকল ইনফরমেশন গুলো দিবেন। এরপর আপনার যদি আগে কোন পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে yes যদি আপনার আগে কো পাসপোর্ট না থাকে তাহলে ( No I don’t have any previous/ handwritten passport?) তে টিক দিবেন।
এরপর আপনি আপনার ঠিকানা দিয়ে দিবেন। আপনার স্থয়ী বা বর্তমান ঠিকানা একই হয় তবে নিচে থাকা টিক মার্ক টি দিবেন। এরপর সঠিক ভাবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী আপনার বাবা মায়ের নাম দিবেন।
তারপর আপনার মোবাইল নাম্বার টি দিবেন এবং আপনার পাসপোর্ট এর ধরন নির্বাচন করে দিবেন। যেমনঃ আপনার পাসপোর্ট টি কতো বছর মেয়াদি এবং কতটি পাতায় করতে চান তা দিয়ে দিবেন।
পাসপোর্ট আবেদন কপি প্রিন্ট করার নিয়ম।
আপনার পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আপনি ফর্ম প্রিন্ট করার অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে দুটি পেজ থাকবে
প্রথমটি হচ্ছে (Application Summery) এবং
দ্বিতীয়টি হচ্ছে (Registration Form)
এখান থেকে আপনি খুব সহজেই প্রিন্ট অথবা পিডিএফ ফরমেটে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কিভাবে বিকাশের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর ফি প্রদান করতে হবে তা জানতে – পড়ুন
ই পাসপোর্ট করার খরচ।
৪৮ পেইজের ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট।
* ২ দিনে পেতে হলে ৭৫০০ টাকা। (অতি জরুরি)
* ৭ দিনে পেতে হলে ৫৫০০ টাকা। (জরুরি)
* ১৫ দিনে পেতে হলে ৩৫০০ টাকা। (সাধারণ)
৪৮ পেইজের ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট।
* ২ দিনে পেতে চাইলে হবে ৯০০০ টাকা। (অতি জরুরি)
* ৭ দিনে পেতে চাইলে ৭০০০ টাকা। (জরুরি)
* ১৫ দিনে পেতে চাইলে ৫০০০ টাকা। (সাধারণ)
৬৪ পেইজের ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট।
* ২ দিনে পেতে চাইলে ১০৫০০ টাকা। (অতি জরুরি)
* ৭ দিনে পেতে চাইলে ৭৫০০ টাকা। (জরুরি)
* ১৫ দিনে পেতে চাইলে ৫৫০০ টাকা। (সাধারণ)
৬৪ পেইজের ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট।
* ২ দিনে পেতে হলে ১২০০০ টাকা। (অতি জরুরি)
* ৭ দিনে পেতে হলে ৯০০০ টাকা। (জরুরি)
* ১৫ দিনে পেতে হলে ৭০০০ টাকা। (জরুরি)
পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।